IQNA

কুরআন হতে জ্ঞান/৩

দুর্বল বিশ্বাস এবং আত্মহত্যার মধ্যে সম্পর্ক 

22:09 - November 17, 2022
সংবাদ: 3472835
তেহরান (ইকনা): বৈজ্ঞানিক তথ্য এবং প্রকাশিত গবেষণাগুলি নিশ্চিত করে যে নাস্তিকরা  সবচেয়ে বেশী নিরাশ হয় এবং তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বেশী থাকে।
"নাস্তিকতা, আত্মহত্যা এবং ইসলামিক শিক্ষার শক্তি" শীর্ষক একটি নোটে আবদ আল-দাইম আল-খাইল জোর দিয়েছেন যে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ভিত্তিতে, নাস্তিকদের মধ্যে আত্মহত্যার সংখ্যা অন্য যেকোনো ধর্মের তুলনায় বেশি।  
নাস্তিকরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের নাস্তিকতা, ধারণা এবং স্বাধীনতার উপর জোর দিয়েছে এবং এই বৈশিষ্ট্যগুলিকে মু’মিনদের সাথে তাদের পার্থক্য হিসাবে উপস্থাপন করেছে এবং এই কারণে, তারা নিজেদেরকে অন্যদের চেয়ে সুখী মনে করে। 
কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় এটা নির্ণয় করা হয়েছে যে, নাস্তিকরাই সবচেয়ে নিরাশ মানুষ! এই গবেষণায়, এটি প্রমাণিত হয়েছে যে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি অজ্ঞেয়বাদীদের (অধর্মীয়) মধ্যে সংগঠিত হয়েছে, অর্থাৎ যারা কোনো ধর্মের অনুসারী নয় এবং লক্ষ্য ছাড়া এবং বিশ্বাস ছাড়াই জীবনযাপন করে।
আত্মহত্যা সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি নাস্তিক দেশগুলিতে এবং তাদের শীর্ষে রয়েছে সুইডেন, যেখানে নাস্তিকতার হার সবচেয়ে বেশি। বৈজ্ঞানিক গবেষণাগুলি নিশ্চিত করে যে আত্মহত্যার হার কমাতে ধর্মীয় শিক্ষা একটি বড় ভূমিকা পালন করে। এ ব্যাপারে ইসলাম সবচেয়ে শক্তিশালী শিক্ষা পেশ করেছে এবং এই ধর্মেই আত্মহত্যার বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
বুখারী ও মুসলিমের মতো সহীহ রেওয়ায়তমূলক গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন: 
من قتل نفسه بحديده فحديدته في يده يتوجأ بها في بطنه في نار جهنم خالدًا مخلدًا فيها أبدًا، ومن شرب سمًا فقتل نفسه، فهو يتحساه في نار جهنم خالدًا مخلدًا فيها أبدًا، ومن تردى من جبل فقتل نفسه، فهو يتردى في نار جهنم خالدًا مخلدًا فيها أبدا
যে ব্যক্তি লোহার দ্বারা আত্মহত্যা করবে তাকে তার হাতে একটি লোহার টুকরা নিয়ে আনা হবে, যার একটি অংশ তার পেটে প্রবেশ করানো হবে এবং সে জাহান্নামের অন্তিম আগুনে প্রবেশ করবে, যেখানে সে চিরকাল জ্বলবে এবং যে ব্যক্তি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবে, তাকে সহ তার হাতে থাকা বিষটি জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করা হবে এবং তাতে চিরকাল জ্বলতে থাকবে এবং যে ব্যক্তি পাহাড় ( অথবা উঁচু স্থান) থেকে  লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে এবং সেখানে চিরকাল থাকবে।
এটি আত্মহত্যা সম্পর্কে মানুষকে দেওয়া সবচেয়ে ভয়ংকর সতর্ক বার্তা। এই হাদিসে আত্মহত্যার ৯০% এরও বেশি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে এবং নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আমরা যদি জাতিসংঘের পরিসংখ্যান দেখি, তাহলে আমরা বুঝতে পারব যে, বন্দুক বা ছুরি দিয়ে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করা হয়, যা হাদিসে উল্লেখ আছে: من قتل نفسه بحديده: যে ব্যক্তি লোহার দ্বারা আত্মহত্যা করবে। 
হাদিসে বিষ খাওয়ার কথাও বলা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে: " ومن شرب سمًا : যে ব্যক্তি বিষ পান করে" এবং উচ্চতা থেকে লাফ দেওয়া, যা হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে: " ومن تردى من جبل", 
অতএব, এখানে প্রমাণিত হয় যে, ইসলাম এ ধরনের বিপজ্জনক ঘটনাকে উপেক্ষা করেনি। এর জন্য আগে থেকেই উপযুক্ত ও শক্তিশালী চিকিৎসার প্রস্তাব দিয়েছে।
গবেষণা অনুসারে, গত পঞ্চাশ বছরে আত্মহত্যার হার অনেক বেড়েছে এবং গত পঞ্চাশ বছরে নাস্তিকতার হার বৃদ্ধির কারণে এই আত্মহত্যার হার বৃদ্ধি যে হতে পারে তা গোপন নেই।
সুইডেন এবং ডেনমার্কের মতো বাকস্বাধীনতার অজুহাতে যারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে, তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য সেসকল দেশসমূহ কোন কঠোর আইন আরোপ করে না, এধরণের দেশগুলোয় আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি।
 
captcha